খবর পুরুলিয়া
পুরুলিয়া সংস্কৃতির পীঠস্থান মানভূম। বৃহত্তর মানভূমের পুরুলিয়া, ধানবাদ, বোকারো, পটমদা, চন্ডিল, ইঁচাগড় এ প্রায় এক হাজারেরও বেশি পেশাদার শিল্পী রয়েছে। লকডাউন এর জেরে এবং বর্তমান পরিস্থিতে পেশাদার সংগীত শিল্পী, নৃত্যশিল্পী, যাত্রা শিল্পী, অভিনেতা, অভিনেত্রী, কীর্তন শিল্পী, অডিও রেকর্ডিং স্টুডিও, ক্যামেরাম্যান, চিত্রপরিচালক সহ এই সব কাজের সঙ্গে যুক্ত অন্যান শিল্পী এবং তাদের পরিবার চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। লকডাউন পরবর্তীতেও এক বছরের অধিক সময় পেশাদার শিল্পীদের কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। অথচ এই পেশাদার শিল্পীদের অধিকাংশই কোন সরকারি সহায়তা পান না। তাই মানভূমের পেশাদার শিল্পীদের আর্থিক সহায়তা জন্য পুরুলিয়া জেলা স্বাসকের মধ্যে পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেওয়া হয় মানভূম প্রফেশনাল আর্টিস্ট এসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে। পুরুলিয়া জেলা শাসকের দপ্তরে সংগঠনের পক্ষে বেশ কয়েকজন উপস্থিত হয়েছিলেন সামাজিক দূরত্ব ও অন্যান বিধি মেনেই। সংগীত শিল্পী চিরঞ্জিত ব্যানার্জী জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্টেজ প্রোগাম বন্ধ থাকায় মানভূমের পেশাদার সংগীত শিল্পীরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। আগামী এক বছরের বেশি সময় কোন অনুষ্ঠান পাবে না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি তুলে ধরলাম। এবং শিল্পীদের আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানামাল। চিত্রপরিচালক স্বপন হুজুরী জানান, এখন তো মানভূম এলবাম, শর্টফিল্ম, টেলিফিল্মএর শুটিং বন্ধ। তাই কর্মহীন হয়ে পড়েছে মানভূমের অভিনেতা, অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী, ক্যামেরাম্যান সহ অনেকেই। তাই তাদের ভবিষ্যৎ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে অবগত করার জন্য স্বারকলিপি দেওয়া হয়েছে। অভিনয় শিক্ষক তথা চিত্রপরিচালক দেবরাজ মাহাতো জানান, মানভূমকে কেন্দ্র করে মিনি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সম্ভাবনা রয়েছে। মানভূমে অসংখ্য এলবাম, টেলিফিল্ম, শর্ট ফিল্ম হয়েছে যা ভারতবর্ষের কোন জেলাকে কেন্দ্র করে সম্ভবত এত কাজ হয়নি। ওই পেশাদারী শিল্পের জন্য হাতে গোনা ২/১ টি স্কুল। কিন্তু বর্তমানে ক্লাস বন্ধ। তাই কর্মহীন হয়ে পড়েছে সেই স্কুল বা প্রোডাকশন হাউস গুলির সাথে যুক্ত কর্মীরা। তাদের উৎসাহ এবং পাশে দাঁড়ানোর জন্য জেলা শাসকের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়। অডিও রেকর্ডিং স্টুডিওর পক্ষে বুবাই ঘোষ জানান, শুটিং বন্ধ থাকার কারনে এখন অডিও রেকর্ডিং বন্ধ আছে তাই তারাও কর্মহীন। সরকার যেন তাদের কোথাও ভাবেন। পাশাপাশি মানভূমে পেশাদার যাত্রাশিল্পীদের পক্ষে যামিনী মাহাত জানান, গ্রামীন যাত্রাগুলিতে তারা অভিনেত্রী, যাত্রার আনুষঙ্গিক জিনিস সরবরাহ করে। এখন যাত্রা বন্ধ করোনা পরবর্তী এক বছরের বেশি সময় গ্রামীন যাত্রা হবে না বললেই চলে। তাই চরম বিপর্যয়ে এই যাত্রার সঙ্গে যুক্ত অভিনেত্রী ও অন্যান্য সকলেই। মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাই অনেকটাই আশাবাদী মানভূমের পেশাদার শিল্পীরা। সরকার হয়তো তাদের কথা ভাববেন।
No comments:
Post a Comment